শিশুদের মোবাইল ব্যবহার কমাতে অভিভাবকের করণীয় মা-বাবা।
সুতরাং সর্বাগ্রে মা-বাবার সচেতনতাই শিশুর মোবাইল ফোন ব্যবহার কমাতে পারে।পাশাপাশি শিশুদের মোবাইল ফোনের পরিবর্তে বিভিন্ন ধরনের গল্পের বই পড়ার প্রতি আগ্রহ বাড়াতে হবে। সৃজনশীল কাজে যেমন- ছবি আঁকা, গল্প করা, নাচ-গান করা, পাজল খেলায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে। মা-বাবাকে বাচ্চাদের সামনে মোবাইল ফোন ব্যবহার কমাতে হবে। শিশুদের সঙ্গে খেলাধুলা ও গল্প করতে হবে। বাইরে প্রকৃতির সান্নিধ্য উপভোগ করতে বেড়াতে নিয়ে যেতে হবে। তাহলেই আমাদের শিশুরা মোবাইলের আসক্তি থেকে মুক্তি পাবে ও নিজেকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে দেশের উন্নয়নে কাঙ্ক্ষিত অবদান রাখতে পারবে।
মোবাইল ফোনের কল্যাণে মানুষের যোগাযোগের ক্ষেত্রে যেমন অভাবনীয় বিপ্লব ঘটেছে, ঠিক তেমনি কিছু বিড়ম্বনাও তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে শিশুদের জন্য স্মার্টফোন বেশ বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। মোবাইল ফোন মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে বিরূপ প্রভাব। একজন গবেষক মতে বাবা-মা সন্তানদের সময় কম দেওয়ার কারণে ৮৫ শতাংশ শিশু স্মার্টফোন আসক্তিতে ভুগছে,খেলার মাঠের অভাবে ৫২ শতাংশ, খেলার সাথীর অভাবে ৪২ শতাংশ শিশু স্মার্টফোনে আসক্ত হচ্ছে। ৭৯ শতাংশ প্রি-স্কুল শিশু কার্টুন দেখার জন্য, ৪৯ শতাংশ গেম খেলার জন্য, ৪৫ শতাংশ শিশু ভিডিও দেখা বা গান শোনার জন্য স্মার্টফোন ব্যবহার করে। শুধু ১৪ শতাংশ শিশু পড়াশোনার জন্য স্মার্টফোন ব্যবহার করে। যাদের মধ্যে ৯২ শতাংশ তাদের বাবা-মায়ের স্মার্টফোন ব্যবহার করে ও ৮ শতাংশ শিশুর ব্যবহারের জন্য পৃথক স্মার্টফোন আছে। বাংলাদেশের শিশুরা প্রতিদিন গড়ে প্রায় তিন ঘণ্টা স্মার্টফোন ব্যবহার করে, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক সুপারিশকৃত সর্বোচ্চ সময়ের থেকেও প্রায় তিনগুণ বেশি ৭৩ শতাংশ মা তাদের বাচ্চাদের স্মার্টফোন হাতে তুলে দিয়ে ব্যস্ত রাখেন কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই নিজেদের কাজ করার জন্য। ৭০ শতাংশ মা তাদের বাচ্চাদের স্মার্টফোন দেন কারণ তাদের বাচ্চারা স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পছন্দ করে। ৬৭ শতাংশ মা তাদের সন্তানকে খাওয়ানোর জন্য ও ৩১ শতাংশ মা শিশুকে ঘুম পাড়ানোর জন্য স্মার্টফোন ব্যবহার করেন। গবেষণায় দেখা যায়, যেসব বাবা-মা প্রতিদিন তিন ঘণ্টা বা তার বেশি সময় স্মার্টফোন ব্যবহার করেন তাদের সন্তানরা স্মার্টফোনে আসক্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৯০ গুণেরও বেশি।
পেশাজীবী মায়েদের বাচ্চারা অধিকহার স্মার্টফোন আসক্তিতে ভুগছে, কেননা তারা তাদের সন্তানদের প্রয়োজন অনুসারে সময় দিতে পারছেন না। স্মার্টফোনে আসক্ত শিশুরা আসক্ত নয়, এমন বাচ্চাদের তুলনায় মারাত্মক মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছে শিশুদের স্মার্টফোন ব্যবহারের ফলে একটা সময় এটা অভ্যাসে বা আসক্তিতে পরিণত হয়। অনেক দিন ধরে মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে শিশুদের কারও কারও শারীরিক ও মানসিক সমস্যাও দেখা দেয়।