শাসন করে সন্তানের ভুল সংশোধনের বিরাট ভুল

শাসন করে সন্তানের ভুল সংশোধনের বিরাট ভুল

আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ,মা বাবকে খেয়াল রাখতে হবে শিশু কিশোররা ভুল করে আপনি অভিবাক হিসেবে মারধর করে কোন কিছু শিখাতে যাবে না।

বাচ্চাদের জীবন যাপনঃ বাচ্চারা অনুকরণ প্রিয় আপনি যা করবেন তা শিখবে,বাচ্চারা ছোট বড় নানা ভুল করলে আপনাকে ধৈর্য্যধারন করতে হবে বাচ্চার গায়ে কোন প্রকার হাত তুলা যাবেনা কারণ তার মনস্তত্ত্বে আঘাত লাগবে। এতে মানসিক ভাবে ক্ষতি হতে পারে,তাকে বুঝিয়ে সুন্দর করে বলতে হবে।অনেক সময় সন্তান কথা না শুনলে তাদের মেরেধরে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেন অনেক অভিভাবক।অভিভাবকদের এই পন্থাকেই তারা সঠিক মনে করতে শুরু করে।এতে স্বভাবতই নিজের বন্ধুদের সঙ্গে কথায় কথায় মারপিটে জড়িয়ে পড়ে তারা। ভুল করার পর মা-বাবার মারের হাত থেকে বাঁচতে বাচ্চারা মিথ্যে কথা বলতে শুরু করে ক্রমশই মিথ্যে কথা বলা তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়।

অভিভাবকের স্বভাবের প্রতিফলন ঘটে সন্তানের মধ্যে। মা ও বাবাকে দেখেই বাচ্চারা অনেক কিছু শেখে। ছোট-খাটো বিষয় বাচ্চাদের বকাবকি বা মারধর করলে সেটাকেই তারা ভুল সংশোধনের সঠিক পদ্ধতি মনে করে পরবর্তী কালে যে কারও ভুল শুধরানোর জন্য তারা এই পদ্ধতিই গ্রহণ করে। অভিবাক কে খেয়াল   রাখতে হবে মারধরের কারণে যে শুধু শারীরিক পীড়া হয় তা-ই নয়, বরং মানসিক দিক দিয়েও তারা আঘাত প্রাপ্ত হয়। তাদের মনে ভয় বাসা বাঁধে। এর ফলে তারা সবসময় ভীত সন্ত্রস্ত থাকতে শুরু করে। আবার অধিক হিংসার শিকার বাচ্চাদের মধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণের অভাব লক্ষ্য করা যায়। এমনকি কঠিন পরিস্থিতি কী ভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখবে, তাও বুঝে উঠতে পারে না তারা। এ ভাবেই ধীরে ধীরে অবসাদের কবলে পড়ে বাচ্চারা।

বাচ্চাদের কে কিছু কিছু অভিভাবক কথায় কথায় বাচ্চাদের দোষ-ত্রুটি ধরে তারা ভালো কিছু করার চেষ্টা করলেও, তার মধ্যে খুঁত ধরেন। অনেক অভিভাবকই নিজের বাচ্চার সঙ্গে তাদের বন্ধুর তুলনা করে থাকেন। এর ফলে নিজের ওপর থেকে বিশ্বাস হারাতে শুরু করে তারা।

বাচ্চাদের সবসময় মারধর করলে তাদের আত্মবিশ্বাসও আহত হয়। নিজের ওপর থেকে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে ক্রমশই একাকীত্বে ভুগতে শুরু করে।বাচ্চাদের অধিক মারধর করলে হীতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে। মার খাওয়ার ভয় চলে গেলে, ভুল সংশোধনের পরিবর্তে তারা একই ভুল বার বার করতে থাকে।বাচ্চা সব সময় মার খেলে মা-বাবার প্রতি তাদের মনে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। ফলে তারা মা-বাবা থেকে দূরে সরে যেতে শুরু করে। আবার বাচ্চাদের মনে রাগ জমলে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটানোর জন্য অভিভাবক বা অন্যদের সঙ্গে তর্ক জুড়ে দেয়। অনেক সময় রাগ পুষে রাখে এবং ভবিষ্যতে কোনও ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বসে।মার খাওয়া গা-সওয়া হয়ে গেলে এক সময়ের পর বাচ্চারা ঢিট ও জেদি হয়ে পড়ে। কিশোর অবস্থায় পৌঁছতে পৌঁছতে তারা সম্পূর্ণ রূপে বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। তখন ভালোবেসে বা আদর করে কিছু বললেও মা-বাবার কথা কানে তুলবে না তারা। যে কোনও ভুলের জন্য শুধু মার খেলে, বাচ্চারা তাতেই অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। তখন মা-বাবার বকাবকি বা মারধরকে গায়ে মাখে না তারা।

এক্ষেত্রে প্রত্যেক বাবা মা কে বাচ্চাদের প্রতি শাসন করতে খেয়াল রাখতে হবে মন মেজাজ বুঝতে হবে।